প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে পাস হওয়া বাজেটের তেমন পরিবর্তন নেই। দুই-এক জায়গায় সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। এবারের বাজেট আগের বছরের বাজেটগুলোরই ধারাবাহিকতা বা গতানুগতিক। কিছু কিছু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের মধ্যে আশা ছিল, কিন্তু চূড়ান্ত বাজেটে সেগুলো আমরা দেখিনি। পরিবর্তন হলে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে মধ্যবিত্ত কিছুটা স্বস্তি পেত। এছাড়া রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে উচ্চ ধনীদের বিভিন্ন স্ল্যাবের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি যারা অবৈধ উপায়ে উপার্জন করছেন তাদের ধরার জন্য আলাদা মেকানিজমের ব্যবস্থা করতে হবে।

পাসকৃত বাজেটে যেসব পরিবর্তন হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- যাদের বার্ষিক আয় ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার ওপর, তাদের জন্য প্রযোজ্য করের সর্বোচ্চ সীমা ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে সরে এসে সর্বোচ্চ করের হার ২৫ শতাংশে বহাল রেখেছে। আমার মতে, এখানে আরেকটু পরিবর্তন আনা যেত। ৩৮ দশমিক ৫ না করে ৪৫ লাখ বা এমন কিছু করতে পারত।

মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ চাপে আছে। এজন্য সবার একটি আশা ছিল, সর্বনিম্ন আয়করের সীমা বাড়ানো হবে। কিন্তু সেটা করা হয়নি। সবকিছু বিবেচনায় বলা যেতে পারে, গতানুগতিক একটা বাজেট হয়েছে। এ বাজেটে নতুন কিছুই নেই। সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিরতা বজায় রাখা এবং মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ কাজ নয়। তারপরও কিছু প্রত্যাশা ছিল। যেমন- কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে সরাসরি ১৫ শতাংশ না দিয়ে বিকল্প কিছু রাখতে পারত। আমি সব ক্ষেত্রেই বিকল্প রাখার পক্ষে। এখানে বলা যেতে পারত, ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অপ্রদর্শিত আয়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের সুযোগ দেয়া যেতে পারে। এর উপরে গেলে এ সুযোগ পাবে না। সেক্ষেত্রে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। প্রধানমন্ত্রীও এমন একটি প্রস্তাব রেখেছিলেন।

মূল্যস্ফীতি দ্রুত না কমলেও নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে কিছু পরিবর্তন আনতে পারে সরকার। যেমন- টিসিবিসহ অন্যান্য যে কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে সেগুলোকে আরেকটু ঢেলে সাজানো যেতে পারে। বাজার ব্যবস্থাপনায় আরেকটু জোর দিতে পারে।

 

দৈনিক ভোরের কাগজে ১ জুলাই ২০২৪ এ প্রকাশিত।

 

 

Author